এবার আ.লীগ নেতা অধ্যক্ষ ফারুকের প্রভাষক নিয়োগকালীন সময়ে শিক্ষাগত অযোগ্যতার বিষয়েও সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও আ.লীগ নেতা ফারুক আহমেদ তালুকদারের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত চলছে।
গত ১০ নভেম্বর সুসং দুর্গাপুর দুর্নীতি ও নিপীড়ন বিরোধী ভার্সিটিয়ান মঞ্চের পক্ষে আহ্বায়ক কাজী আশফিক রাসেল দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটি কর্তৃক ইতিমধ্যে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।
ভার্সিটিয়ান মঞ্চের অন্যান্য অভিযোগসমূহের মধ্যে একটি অভিযোগ ছিলো – সুসং মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক (কম্পিউটার) পদে নিয়োগকালীন সময়ে প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অভিযুক্ত ফারুক আহমেদ তালুকদারের কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলো না। প্রমাণ হিসেবে কলেজটি জাতীয়করণের প্রাক্কালের একটা অডিট রিপোর্ট এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন সংযুক্তি দেওয়া হয়। এরইমধ্যে গতকাল ২৯ জানুয়ারি বুধবার তদন্তকারী টিম সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ে যান ফারুকের নিয়োগকালীন সময়ে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য। এব্যাপারে তদন্ত কমিটির আহবায়ক উপজেলা কৃষি জনাব নিপা বিশ্বাস ও তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য উপজেলা খামার ব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা তদন্ত টিম নিয়ে সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে সত্যায়িত কপি সংগ্রহ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ফারুক সাহেবের ব্যাপারে একটা তদন্তকারী টিম গতকাল এসেছিলো কিছু ডকুমেন্টসের সত্যতা যাচাই করার জন্য। আমরা তাদেরকে সব সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করেছি। অভিযোগকারী কাজী আশফিক রাসেল প্রমাণ হিসেবে মাউশির পরিদর্শন প্রতিবেদনসহ যেসব ডকুমেন্টস তদন্ত কমিটির নিকট জমা দিয়েছেন সেগুলোর সাথে সার্টিফাইড কপিগুলোর মিল আছে বলেও সত্যতা স্বীকার করেছেন সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও তদন্তকমিটির একাধিক কর্মকর্তা।
সুসং সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা জানায়, ” অভিযুক্তের দুর্নীতির এতো স্বচ্ছ প্রমাণথাকাস্বত্ত্বেও তদন্ত কমিটি মনগড়া কোনো রিপোর্ট দিতে চাইলে তারাও পার পাবে না। আমরা আশা করি সত্যের জয় হবে ”
মঞ্চের আহ্বায়ক কাজী আশফিক রাসেল বলেন, আমরা সব অকাট্য প্রমাণ উপস্থাপন করেছি। এতটুকুক বাড়িয়ে বলি নি। আমরা সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতেই অভিযোগটি করেছি। সুষ্ঠু তদন্ত হলে সব অভিযোগই সত্য প্রমাণিত হবে ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে বিতর্কিত উপায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ তালুকদার একদশকের বেশি সময় সুসং মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক ছিলেন। তার নিয়োগকালীন সময়ে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলো না – ২০১৪ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদনে ইহা একটি মীমাংসিত বিষয়। উল্লেখিত পরিদর্শন প্রতিবেদনটির স্মারক নংঃ১) ৩৭.০০০.০০০.৭০.০৯.০০২.২০১৪-১২৯ তারিখঃ ০৪/০৫/২০১৪২) ওএম/০৭সি-১/২০১৪/৭১৭৭ তারিখঃ ১২/০৬/২০১৪
কলেজটি জাতীয়করণের প্রাক্কালে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তিনজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যথাক্রমে জনাব এটিএম মইনুল হোসেন, উপপরিচালক (কলেজ-১), জনাব মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সরকার, উপপরিচালক (কলেজ-২), জনাব মোহাম্মদ তাজিব উদ্দিন, সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) স্বাক্ষরিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটিতে শুধু অভিযুক্ত ফারুক আহমেদ তালুকদার না, কলেজটির সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সামগ্রিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-১ আসনের দুইদুই বারআওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী শীর্ষ নেতা ফারুক আহমেদ তালুকদার নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রশাসনিক নেটওয়ার্ককে কুক্ষিগত করে এতোদিন বহাল তবিয়তে ছিলেন বলেও জানা গেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা করে কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ে প্রভাষক বনে যান ক্ষমতার অপব্যবহার করে।
Links are opening...
Post a Comment